আমরা আগের শ্রেণিতে ইতোমধ্যে তথ্য ঝুঁকি ও সাইবার নিরাপত্তার প্রাথমিক ধারণাগুলো পেয়েছি। শুধু তাই নয়, আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদেরও এসব ব্যাপারে অনেক সচেতন করেছি। এ পর্যায়ে আমরা এই ধারণাগুলোর আরেকটু গভীরে যাব। সাইবার দুর্বৃত্তরা মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য অনুমতি ছাড়া নিয়ে নেওয়ার জন্য অনেক উপায় বের করেছে। এমন কয়েকটি উপায় সম্পর্কে আমরা এখন জানব।
আমাদের বাবা মা বা পরিচিত অনেকের মোবাইলে মেসেজ বা ই-মেইল আসে যেখানে একটি লিংক পাঠিয়ে ক্লিক করার জন্য বলা হয়। বলা হয় যে ক্লিক করলে অনেক টাকা বা দামি পুরস্কার পাওয়া যাবে। এ ধরনের ঘটনাকে বলে ফিশিং।
ফিশিং (Phishing) ইংরেজি বানান ভিন্ন হলেও এটি মূলত বড়শির ফাঁদ ফেলে মাছ ধরার ধারণা থেকে এসেছে। পরিচিত বা আমরা বিশ্বাস করি এমন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়ে ডিজিটাল মাধ্যমে যোগাযোগ করে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ, গোপনীয় তথ্য বা আর্থিক সম্পদ হাতিয়ে নেওয়াকে ফিশিং বলে।
|
পরের পৃষ্ঠার ই-মেইলটি দেখি:
এটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যাংকের গ্রাহকদেরকে সত্যি সত্যি পাঠানো হয়েছিল। যেহেতু গ্রাহকদের বেশিরভাগ ইংরেজি ভাষাভাষী, তাই ই-মেইলের ভাষা ইংরেজি।
একটি ব্যাংক যখন কোনো চিঠি পাঠায় তাতে সাধারণত ব্যাকরণগত বা বানান ভুল থাকে না। কারণ তা যথাযথ সংশোধন হয়ে গ্রাহকের কাছে যায়। চল আমরা দেখি, উপরের চিঠিতে কী ভুল আছে-
বানান ভুল: received, discrepancy
ফিশিং বার্তা শুধু ই-মেইলে নয় মুঠোফোনেও আসতে পারে। পরের পৃষ্ঠার বার্তাটি খেয়াল করি। এটিও কিন্তু সত্যিই কিছু মানুষকে পাঠানো হয়েছিল।
আমাদের কাছে যদি এরকম কোনো বার্তা আসে তাহলে এটি আসল না নকল বুঝব কি করে?
প্রথমে আমরা আমাদের শ্রেণিশিক্ষকের পরামর্শ নিব। যদি তিনি বলেন এই সময়ে এ ধরনের ক্ষুদেবার্তা আসার কথা তাহলে আমরা এই বার্তাকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে যাচাইয়ের পরের ধাপে যাব। যদি তিনি বলেন এই সময়ে এরকম বার্তা আসার কথা না তাহলে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত এটি একটি প্রতারণা!
এরপর চিন্তা করি আমাদের কোনো রকম উপবৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা। ধরা যাক এই সময় আমার কোন উপবৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেক্ষেত্রে হতে পারে আরেকজনের জন্য পাঠানো বার্তা ভুল করে আমাদের কাছে চলে এসেছে। কাজেই অপ্রাসংগিক বিধায় আমরা এটি ফেলে দিব বা ডিলিট করে দিব।
ধরি আমরা এমন শ্রেণিতে পড়ি যেখানে উপবৃত্তি দেওয়া হয়। তাহলে? প্রথমে দেখতে হবে যে ফোন নম্বর থেকে বার্তাটি এসেছে বা যে নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে সেটি আসল না নকল। এই বার্তায় দেখি একটি নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আমরা যে শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এটি কি তাদের নম্বর? সেটিই বা জানব কি করে? খুব সহজ। প্রথমে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে সেই বোর্ডের ওয়েসবাইটে যাবে।
ধরি আমরা চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে। এই শিক্ষাবোর্ডের ওয়েব ঠিকানা হলো https://bise-ctg.portal. gov.bd/। আমরা কিন্তু আগের শ্রেণিতে শিখেছি কিভাবে ঠিকানা থেকে ওয়েবসাইটে যেতে হয়। সেখানে গেলে আমরা চিত্র ২.৩ এর ওয়েবপেজটি দেখতে পারব।
এই ওয়েবসাইটে যোগাযোগের ফোন নম্বর কোথায় পাব? পেজটি ভাল করে খেয়াল করি। দেখব এক জায়গায় "যোগাযোগ” কথাটি আছে। সেটিকে গোল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করি। কম্পিউটার বা মুঠোফোনের পর্দায় যদি চাপ দিই দেখব আমরা আরেকটি ওয়েবপেজে চলে গেছি যেটি দেখতে নিচের মতো।
আমরা চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের যোগাযোগের ঠিকানায় দেওয়া একটি নম্বরে যোগাযোগ করে আমাদের কাছে পাঠানো বার্তার সত্যতা যাচাই করে দেখতে পারি।
অপরিচিত নম্বর থেকে আসা ফিশিংয়ের চেষ্টা থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে এবার আমরা নিচের মাইন্ড ম্যাপটি পূরণ করব -